দিনাজপুরের খানসামায় একটি পাতায় চিরকুট লিখে জুই রায় (২২) নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। ‘আত্মহত্যা’র আগে সে তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে সেই এক পাতার চিরকুটটি লিখে গেছেন এভাবে- ‘বাবা-মা সবাই ভালো থাকো।
মোর শ্বশুর-শাশুড়ি, স্বামী, ননদ, ননদীয়া সবাই ভালো থাকো। মুই মরি গেইলে আরও বিয়াও করিস, সুখে থাকিস, ভালো থাকিস। তোর জীবনে মুই আর কাঁটা হয়া থাকিবার চাই না। মোর আর কোনো ইচ্ছা নাই। তোর জীবন থাকি মুই যদি চলি যাই, তাহলে তোর পছন্দ মতো মেয়েকে বিয়ে করিস।’
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের রামনগরে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, জুঁই কমল রায়ের মেয়ে ও ভাবকী গ্রামের শওরোতলী এলাকার জীবন রায়ের স্ত্রী।
স্থানীয়সুত্রে জানা যায়,প্রায় দেড় বছর আগে পরিবারিকভাবে জুঁই রায় ও জীবন রায়ের বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পর পারিবারিক ঝামেলায় বাবার বাড়ি চলে যান জুঁই। কিন্তু দীর্ঘ এক বছরেও দুইজনের সমস্যার সুরাহা হয়নি।ধারণা করা হচ্ছে এই কারণে ক্ষোভ ও অভিমানে মেয়েটি তার বাবার বাড়িতে বিষপান করেন বলে দাবি পরিবারের।
পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সয়ে নেওয়া হয়। সেখানে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল তাকে মৃত ঘোষণা করনে।
ঐ চিরকুটে জুই রায় তার স্বামীর উদ্দেশে লিখেন, ‘তোর কাছো তো মোর কোনো দাম নাই। সবাইকে নিয়ে সুখে থাকিস। সবার চোখের কাঁটা হচ্ছি, তাই মোর বাঁচি থাকার কোনো ইচ্ছা নাই। সবাই সুখে থাকেন, ভালো থাকো। আর চিরকুটের শেষ লাইনে সে তার স্বামী জীবনকে লিখেন, ‘জীবন ভালো থাকিস।’ এরপর বেশ কয়েকবার ‘জীবন’ শব্দটি লিখেন।
এ বিষয়ে খানসামা থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, নিহত জুই রায়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ও এক পাতার সুইসাইড নোটটি জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই ও অধিকতর তদন্ত চলছে। তিনি আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে এরকম কোনো অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।